কফিল উদ্দিন,চকরিয়া:
চকরিয়া পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদ্রাসার সুপার নুরুল আবসার ছিদ্দিকী কর্তৃক মাদরাসার মুল প্রতিষ্ঠাতাদের ও সাবেক সুপার বৃন্দের নাম বিলুপ্তিকরণের বিরুদ্ধে আপত্তি ও তাঁহাদের নাম স্বসম্মানে পূণঃবহালের দাবীতে করা অভিযোগের আলোকে ৩০অক্টোবর বিকাল ৩টায় গনশুনানী করেছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ফখরুল ইসলাম। মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্ররা বাদী হয়ে এ অভিযোগটি করলেও উত্তাপিত দাবীগুলো সর্বস্তরের মানুষ এলাকার বাসিন্দাদেন গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। গণশুনানী পূর্বনোটিশ মারফত দুপুর ২টায় অনুষ্টিত হওয়ার কথা থাকলেও অভিযুক্ত সুপারের নানান চলচাতুরীর কারণে শুরু হয় বেলা ৩টার পর। অভিযোগ পাহাড় তার বিরুদ্ধে হলেও গণধোলাই আতঙ্কে গণশুনানীতে উপস্থিত হননি, পাঠানো হয়েছে তার কাছ থেকে সুবিধা ভোগ করা দুইজন প্রতিনিধি।
গণশুনানীকালে মাদরাসা সংশ্লিষ্ট সকলে তাদের বক্তব্যে বলেন, অত্র মজিদিয়া মাদ্রাসাটি বিগত ১৯৮২ সালে প্রধান প্রতিষ্ঠাতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা বদরুদ্দৌজা হেলালী (রহঃ) এর নেতৃত্বে এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, গুণীজন ও সমাজসেবিদের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। হাটি হাটি পা পা করে অনেক ত্যাগ তীতিক্ষা ও পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে সোসাইটি হাসপাতাল সড়কে একটি বহুতল বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন এবং কোচপাড়াস্থ বর্তমান মাদ্রাসার একাডেমিক স্থাপনা তৈরীসহ মাদ্রাসার ভৌত অবকাঠামোগত উন্নতি সাধিত হয়। বর্তমান সুপার নুরুল আবছার ছিদ্দিকী যোগদান করেন ২০০২ সালে। তিনি বিগত স্বৈরচারী আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে আওয়ামী ওলামালীগ নেতা পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান প্রতিষ্ঠাতা (বর্তমানে যাহার একমাত্র কবরটি মাদরাসা মাঠে শায়িত) নামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় যাদের অপরিসীম অবদান রয়েছে তাহাদের নাম সম্পুর্ণরূপে বিলুপ্ত করে সুপারের খালা শ্বাশুড়ী জনৈক বুলবুল জন্নাত নামে এক মহিলাকে ২০২৩-২৪ সালে এসে একক প্রতিষ্ঠাতা বানিয়ে নামফলক (স্মরণিকা) তৈরী করে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে টাঙিয়ে দেন।এছাড়া প্রতিষ্ঠাকালীন হতে অনেক সম্মানিত সুপারবৃন্দ (মাদরাসা প্রধান) দায়িত্ব পালন করলেও সাবেক সুপারদের তালিকা থেকে সবার নাম বাদ দিয়ে শুধু মাত্র তাহার একক নিজ নামের ফলক (স্মরণিকা) টাঙ্গিয়েছেন। তিনি (সুপার) মাদরাসার বিভিন্ন শিক্ষকদের চাকুরী হারানোর ভয় ও ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি প্রদর্শণ করে বলতেন, প্রতিষ্ঠান আমি যে রকম চাইবো সে রকম চলবে।
গণশুনানীতে বক্তব্য রাখেন, চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাদরাসা প্রতিষ্টালগ্নের সদস্য মাওলানা ছাবের আহমদ, মাদরাসার সাবেক সভাপতি,প্যানেল মেয়র ও পৌর যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফোরকান, মাতামুহুরী বাশ সমিতির সাবেক সভাপতি মাদরাসা পাড়ার বাসিন্দা সেলিম উদ্দিন, প্রাক্তন ছাত্র প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুল মজিদ। উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি পাড়ার নুরুল ইসলাম প্রকাশ মেজর, প্রতিষ্টাতা পরিবারের মাওলানা কুতুব উদ্দিন হেলালী, কফিল উদ্দিন,
কোচপাড়ার মাষ্টার রুহুল কাদের, নাজেম উদ্দিন,মাষ্টারপাড়ার জামাল হোসেন মাঝু, প্রাক্তন ছাত্র এইচএম হারুন রশিদ টিপু, শিবলি নোমান, মাওলানা ইব্রাহিম, জসিম উদ্দিন,আহসান উল্লাহ, নুর মোহাম্মদ, ইমরান শিশির, জমিদাতা পরিবারের সদস্য নামারচিরিঙ্গার ইয়াসিন ফরহাদ, মুফতি আমিরুল ইসলাম, আবদুর রশিদসহ বিভিন্ন সমাজ ও পাড়ার প্রায় তিন শতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, যারা মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছে তারাই এ পদে থাকবে। সার্বিক বিষয় নিয়ে গোপনীয়ভাবে আরো যাছাই বাছাই করা হবে। তিনি এক পর্যায়ের এধরণের মনোভাবের জন্য ক্ষোভও প্রকাশ করেন এবং খুব শীঘ্রই সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন।
© 2021 - All Rights Reversed Coxs TV | Web Developed by Hostbuzz Inc