আজ, শনিবার | ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চকরিয়ায় মৎস্যঘেরে অবৈধ অস্ত্রধারী এরশাদ বাহিনীর তান্ডব, দুই ঘের কর্মচারীকে মারধর, মাছ ও মালামাল লুট

চকরিয়া প্রতিনিধি:
চকরিয়ায় রাতের আধাঁরে মৎস্যঘেরে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এরশাদ বাহিনীর প্রধান এরশাদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দুই কর্মচারীকে বেধম মারধর বেধেঁ রেখে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে।অস্ত্রের মুখে লুট করে নিয়ে গেছে দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ ও মালামাল। উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া গ্রামের আরজ খাতুনের মৎস্যঘেরে ১৯ আগষ্ট রাত আনুমানিক ১১:৪৫ ঘটিকার দিকে ঘটেছে এ ঘটনা।

চকরিয়ার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৪নং ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া গ্রামের শাহ আলমের আরেজ খাতুন (৫০) বাদী হয়ে থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামী করা হয়েছে; কোনাখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কোনাখালী বাংলা বাজার গ্রামের মৃত আহমদ আলীর পুত্র অসংখ্য মামলার আসামী বহুঅস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী এরশাদ (৪০), তার ভাই জিয়াউর রহমান (৩৭), নাছির উদ্দিনের পুত্র আবছার
(৩২), হারুনুর রশিদের পুত্র আমজাদ (২৮), নাছির উদ্দিনের পুত্র আখি রেজা (২৯), ফরিদ হােছাইনের পুুত্র বাবুল (২৭),
মােহাম্মদ রশিদের পুত্র মুর্শেদ (২৫) মােহাম্মদ ইসমাইলের পুত্র রাকিব (২৮) ও নয়ন (৩৩), আবু শমার পুত্র বাদশা (৩২), ইসমাইলের পুত্র শাকিল (২৭), মােচ্ছার আহমদের পুত্র শাহাব উদ্দিন (৪০), মৃত আবদু জব্বরের পুত্র ইয়াছিন (৩৬),আহমদ আলীর পুত্র মুজিবুল হক (৫০)সহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে।

বাদী অভিযোগে জানাগেছে,
পশ্চিম কোনাখকালীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী অসংখ্য মামলার আসামী অবৈধ বহুঅস্ত্রধারী এরশাদ বাহিনীর প্রধান এরশাদ ওরফে ডাকাত এরশাদের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রথমে ১৯ আগষ্ট রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ঢেমুশিয়া মৌজার ৪নং ওয়ার্ডের হায়দার বাপের টেক বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জনৈক নাগু সওদাগরের মৎস্য প্রজেক্টের মালিক পক্ষের অনুমতিতে ঝাকি জাল নিয়ে মাছ চাওয়া অবস্থায় পূর্বশত্রুতার আক্রোশে বাদীর পুত্র বেলাল উদ্দিন (২৭)কে বেধম মারধর করে অপহরণের চেষ্টা চালায়। ওই সময় “বাঁচাও-বাঁচাও” বলে চিৎকার করলে স্থানীয় এলাকাবাসী চারদিক হতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা ১টি মােটর সাইকেল ঘটনাস্থলে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এদিন রাত আনুমানিক ১১:৪৫ ঘটিকায় ঢেমুশিয়া ও উজানটিয়া মৌজার ৭৫৪নং দাগে বাদীর মালিকানাধীন ১৫ একর বিশিষ্ট মৎস্য ঘেরে বে-আইনী জনতা গঠন করতঃ দেশীয় অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। ঘের কর্মচারী মৃত বাঁচা মিয়ার পুত্র নেজাম উদ্দিন (৪০),এজাহার মিয়ার পুত্র নাজেম উদ্দিন (৪৫)কে মারধর ও বেধে রেখে মৎস্য প্রকল্পের ১লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের আহরিত চিংড়ী ও বিভিন্ন প্রজাতির অনুমান ৫মণ ২০কেজি মাছ, প্রজেক্ট খামার ঘরে থাকা ১৬ হাজার টাকা মূল্যের সৌর বিদ্যুৎ এর সরঞ্জাম, ৮হাজার টাকা মূল্যের ১টি চাক জাল, ৫হাজার টাকা মূল্যের ২টি ঝাকি জাল, খামারে থাকা ৫০ হাজার টাকার খাদ্য সামগ্রী মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। কর্মচারীদের প্রাণে হত্যার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে বেড়িবাধের উপর নির্মিত ১৪হাত ও
৮হাত বিশিষ্ট বাঁশের বেড়া ও ছনের ছাউনীর খামার ঘর পেট্টোল ছিটিয়ে আগুন পুড়িয়ে দিয়ে সন্ত্রাসী এরশাদ বাহিনী কয়েক রাউন্ড ফঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। ধাও-ধাও করে আগুনে খামার ঘর জ্বলন্ত অবস্থায় আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়া দেখে এবং কর্মচারীদের শোর চিৎকার স্থানীয় এলাকাবাসী চারদিক হতে এগিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে খামারের সবকিছু পুড়ে যায়। এতে অন্তত ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। বাংলাদেশ পুলিশের জাতীয় সেবা কেন্দ্রের ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশদল ২০ আগষ্ট রাত ১টার দিকে ঘটনাস্থলে পোছে স্থানীয়দের স্বাক্ষ্য গ্রহণসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। উল্লেখিত সন্ত্রাসী এরশাদ কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদারের আপন চাচাত-জেঠাত ভাই।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মোঃ যুবায়ের বলেন, ঘটনার বিষয়ে মৎস্যঘের মালিক আরজ খাতুনের দেয়া অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।