আজ, বৃহস্পতিবার | ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চকরিয়ায় বন্যা কবলিত ভাঙ্গন মেরামত ও গাইড ওয়াল নির্মাণ আলোর মুখ দেখছে ৬ গ্রামের মানুষ, কৃষিতে বাম্পার ফলের আভাস

আবদুল মজিচদ,চকরিয়া:
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজলোর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সিকদার পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল পাড়া, ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ছড়ারকুল পাড়া ও পশ্চিম ছড়ার কুল পাড়া গ্রামের ছড়ারকুল খাল কেন্দ্রীক গেল বন্যাকালীন ৫২৫ মিটার গাইড ওয়াল, ৫০ মিটার করে ৪টি বন্যা কবলিত ভাঙ্গন মেরামত, দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা মাটি ভরাট ও দেড় কিলোমিটার সড়ক রিপারিং এর উন্নয়ন কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে এসব কাজ সম্পন্ন করায় স্থাণীয় ৬গ্রামের সাধারণ মানুষ সহ কৃষকরা আশার আলো দেখছে। আসন্ন বোরো মৌসুমে কৃষিতে বাম্পার ফলনের লক্ষ্যমাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।

আগামী বন্যায় ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকুল খাল কেন্দ্রীক ৩টি ওয়ার্ডের জনগোষ্ঠীরা। বলতে গেলে তাদের কেটে গেছে সকল উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।
এলাকার সাধারণ জনগন ও কৃষকদের দুর্ভোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে স্থানীয় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী ইতোপূর্বে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় একাধিকবার আবেদন জানিয়েছেন। ফাঁসিয়াখালী ছড়ারকুল খালের দুর্দশা নিয়ে সাবেক চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) জেপি দেওয়ান এর সরেজমিন পরিদর্শনে বিষয়টি গুরুত্ব আরও বেগবান করেন।
চকরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের চাহিদাপত্রের বিপরীতে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকুল খাল কেন্দ্রীক ৫২৫ মিটার গাইড ওয়াল, দেড় কিলোমিটার সড়ক রিপারিং, কাঁচা রাস্তা মাটি ভরাট দুই কিলোমিটার ও ৫০ মিটার করে ৪টি বন্যা কবলিত ভাঙ্গা মেরামতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিশেষ প্রকল্পের আওতায় কাবিখা ও কাবিটা কর্মসুচির আওতায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় কর্তৃক অর্থবরাদ্দ নিশ্চিত হয়ে গতবছরের অক্টোবর মাসে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকুল খাল কেন্দ্রীক ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সিকদার পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল পাড়া, ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ছড়ারকুল পাড়া ও পশ্চিম ছড়ার কুল পাড়ার ৫২৫ মিটার গাইড ওয়াল, দেড় কিলোমিটার সড়ক রিপারিং, কাঁচা রাস্তা মাটি ভরাট দুই কিলোমিটার ও ৫০ মিটার করে ৪টি বন্যা কবলিত ভাঙ্গা মেরামত কাজ আনুষ্ঠানিক শুরু হয়। গেল ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে মাঠপর্যায়ে কর্মরত প্রকৌশলীদের নিবিড় তদারকির মাধ্যমে সুচারুভাবে কাজ সমাপ্ত করা হয়।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী বলেন, প্রকল্পের সিডিউল অনুযায়ী ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সিকদার পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল পাড়া, ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ছড়ারকুল পাড়া ও পশ্চিম ছড়ার কুল পাড়ায় গাইড ওয়াল, সড়ক রিপারিং, কাঁচা রাস্তা মাটি ভরাট ও ৪টি বন্যা কবলিত রাস্তা ও ছড়াখালের ভাঙ্গা মেরামত হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, এসব প্রকল্প উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হওয়ায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডের অন্তত ১২ হাজার মানুষ আগামীতে বন্যার দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পাবে। পাশাপাশি ছড়াখালের দু’কুলের স্থানীয় কৃষকেরা অনায়াসে চাষাবাদের সুযোগ পাবে। এতে চাষের জমির পরিধিও বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম নাছিম হোসেন বলেন, একমাস আগে আমি ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ফসলী জমির চাষাবাদ পরিদর্শনে যাই। বন্যার পূর্বে ভাঙ্গন মেরামত ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করায় এটি নিসন্দেহে কৃষিখাতের জন্য একটি ভালো উদোগ। তিনি আরো বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে আমরা বোরো ধান আবাদে এবছর ৩হাজার একর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। পাশাপাশি প্রতিবছর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে সবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু হাসনাত সরকার বলেন, এলাকার কৃষক ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মাঠপর্যায়ে গণশুনানি করে খাল খননেরগাইড ওয়াল নির্মাণ, ভাঙ্গন মেরামত ও রাস্তা তৈরীর প্রয়োজনীতা নিশ্চিত হয়ে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পরিপত্রের মাধ্যমে অবহিত করেন। ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সিকদার পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল পাড়া, ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ছড়ারকুল পাড়া ও পশ্চিম ছড়ার কুল পাড়ায় গাইড ওয়াল, সড়ক রিপারিং, কাঁচা রাস্তা মাটি ভরাট ও ৪টি বন্যা কবলিত রাস্তা ও ছড়াখালের ভাঙ্গা মেরামতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিশেষ বরাদ্দের আওতায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর এক কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বরাদ্দের বিপরীতে এসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.ফখরুল ইসলাম বলেন, গতমাসে এই উপজেলায় যোগদানের পর সবেমাত্র কয়েকটি ইউনিয়ন পরিদর্শন করে এলজিইডি এবং পিআইও দপ্তরের সঙ্গে উন্নয়ন কাজসমুহ দেখেছি। এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের ফলে বন্যার দুর্যোগ থেকে নিস্তার পাবে ইউনিয়নের জনসাধারণ। পাশাপাশি জীবন-মানও উন্নতি হবে।