আজ, শুক্রবার | ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



বহুল আলোচিত চকরিয়ার এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় – সেই সাকি-সাদির যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ

চট্টগ্রামে দু’বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আপন খালাত ভাই-বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শারমীন ফারজানা লতিফ সাকি (৩৩) ও তার ছোট ভাই মুহাম্মদ ইফতেখার লতিফ সাদি (৩০)।

বুধবার (১ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন বলে চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তসলিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, দুই বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাই বোনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ভাই ইফতেখার লতিফ সাদিকে ৫০ হাজার টাকা এবং বোন শারমীন ফারজানা লতিফকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও সাত বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২ অক্টোবর ২০১০ ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার জয়নগর এলাকায় একটি বাসায় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল মুবিনের দু’মেয়ে মুনতাহা কারিনা ও সালসাবিল তাসনিমকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এতে দু’বোনের শরীর এসিডে ঝলসে যায়। ঘটনার সময় দুই বোনের বয়স যথাক্রমে ২০ ও ১৬ বছর ছিল।

দুই ভিকটিমের পিতা আনোয়ারুল মুবিন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এসিড নিক্ষেপের ঘটনার ১০ দিন পর মানতাহার কারিনার বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল।

তদন্ত শেষে পুলিশ ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ কারিনা ও তাসনিমের খালাতো ভাই সাদি ও সাদির বোন সাকিকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে মোট সাক্ষী ছিল ২৫ জন।

২৮ এপ্রিল ২০১১ তৎকালী মহানগর দায়রা জজ এ কে এম শামসুল ইসলামের আদালত পুলিশের দায়ের করা চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করেন। ওই বছর ৪ ও ৫ মে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

পুলিশের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে সাকির ছেয়ে তার খালাতো বোন কারিনা বয়সে ছোট এবং সুন্দরী। তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল চট্টগ্রাম কলেজের এক প্রভাষকের সাথে। এতে ঈর্ষাকাতর হয়ে সাকি এসিড ছুঁড়ে মারে। আর তাকে এসিড সংগ্রহে সহায়তা করে ভাই সাদি।

ভিকটিম দুই বোনের মা আনার কলি বলেন, আমার মেয়েরা চিকিৎসায় প্রাণ ফিরে পেলেও গত প্রায় একযুগ এক অসহনীয় কষ্ট সহ্য করছি। তারা এখনো পুরোপুরি সুস্থ্য হয়নি। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আশা করবো উচ্চ আদালতে আপিল করলেও এই রায় বহাল থাকবে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ভাই বোন চকরিয়ার মাষ্টার আব্দুল লতিফের ছেলে মেয়ে তারা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।