আজ, শনিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চকরিয়ায় দফাদারের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টা প্রতারকের, গণপিটুনি

চকরিয়া অফিস:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক দফাদারের নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে কথিত সাংবাদিক নামধারী এক প্রতারক। এ সময় স্থানীয় জনতা তাকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া শুরু করলে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে সে। পিটুনিতে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমও হয় ওই প্রতারকের।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাজলী বাপের চর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি ইউনিয়নের কাজলী বাপের পাড়ায়। গণপিটুনির শিকার ওই প্রতারকের নাম সালেম বিন নূর (৩০)। সে রামপুরস্থ ওই পাড়ার মৃত মো. নূরের ছেলে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা পরে এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগ পেয়ে ইউএনও অভিযুক্তকে ডেকে পাঠালে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে সে হাজির হয়। এ সময় ইউএনও তার কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ঘটনা সংঘটিত করে বলে দোষ স্বীকার করে সে। এই অবস্থায় ইউএনও ঘটনায় অভিযুক্তের স্ত্রী ও মাকে ফোন করিয়ে তাঁর অফিসে ডেকে পাঠান। পরে তাদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেয় যে ভবিষ্যতে ওই স্কুল শিক্ষার্থীর সাথে সে আর কোন ঘটনা ঘটাবে না এবং এই ধরণের ঘটনার চেষ্টাও করবে না।
অভিযোগ উঠেছে, মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ইউএনও এবং অফিস কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার শুরু করে। মূলত ধর্ষণচেষ্টার শিকার ওই স্কুলশিক্ষার্থীর বাবার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা একটি মামলার রায় তার অনুকূলে নিতে এই অপপ্রচার শুরু করে বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, একজন দফাদারের স্কুলপড়য়া কন্যাকে ধর্ষণচেষ্টাসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তকে ডাকা হয়েছিল। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে স্বীকারও করে। এ সময় তার কয়েকমাসের শিশু কোলে স্ত্রী এবং মাও উপস্থিত ছিল। তখন তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয় ভবিষ্যতে দফাদারের মেয়ের সাথে আর কোন খারাপ আচরণ করবে না মর্মে। এর পর তাকে অভিযোগকারীর অনুরোধে এবং স্ত্রী ও মায়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি (ইউএনও) এবং কর্মচারীদের নামে অপপ্রচার করা হচ্ছে মূলত আগের একটি মামলার রায় অনুকূলে নিতে এবং মূল ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে।
এ ব্যাপারে গতরাতে চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বা পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে মামলা নেওয়া হবে ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে।’##