চকরিয়া প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের নোয়াপাড়ায় হাদিসা (খতিজাতুল কোবরা) নামে এক ভন্ড বৈদ্যের অবির্ভাব ঘটেছে। তিনি সহজ-সরল মানুষকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিদিন প্রতারণার মাধ্যমে ঝারফোক-তাবিজ-টোনা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা । বিগত বছর খানেক ধরে চালিয়ে আসছে এসব বৈদ্যালি প্রতারণা । স্থানীয় জনতা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অক্ষরজ্ঞানহীন হাদিসা ওই মহিলা নিজেকে স্বপ্নেপ্রাপ্ত বড় পীর-বৈদ্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সোর্স মারফতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজনের কাছ থেকে সর্বরোগের ওষুধ দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ভন্ড বৈদ্য আবির্ভাব ঘটার পর থেকে তার কাছে গিয়ে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীদের ছাত্র-ছায়ায় এবং নাম ভাঙ্গিয়ে বৈদ্যালির নামে চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান ধরেছে। প্রতারক ও ভন্ড বৈদ্য হাদিসা পবিত্র কোরআন শরীফকে অজুবিহীন ও অপবিত্র অবস্থায় হাতে ধরে নানাভাবে অবমাননা করে চলছে। সরে জমিনে গিয়ে দেখা মিলেছে চকরিয়া রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লিখক ও দলিল লিখক সমিতির সাবেক সভাপতি সাইফুল আজম মুন্সীকে। জানাগেছে, তিনিও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাকে দেখানো হচ্ছে অর্থ সহায় সম্পদ, গুপ্তধন সহ বড় বড় প্রলোভন। যার কারণে পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে দিন-রাত পড়ে থাকেন কথিত ভন্ড বৈধ্যের আস্তানায়। বৈদ্যালীতে স্বপ্নেপ্রাপ্ত গুপ্তধনের আখ্যা দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে বেতনধারী একটি চক্র। এভাবে ওই চক্রের খপ্পরে পরে সর্বশান্ত তথা ফতুর হয়ে পড়েছে সাইফুল আজমের মত অসংখ্য পরিবার। অপরদিকে স্বপ্নে মসজিদ তৈরীর কথা বলে প্রায় ৮একর মত জমি জবর দখলের পায়তারাও চালাচ্ছে কথিত ওই ভন্ডবৈদ্য চক্র। সাইফুল আজমের মত অনেক নিরীহ মানুষ ভন্ডবৈদ্যের খপ্পরে পরে পরিবারে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে। আঞ্চলিক প্রবাধ রয়েছে; খোদা বড়- টোনা দর” যেন এই রোগেই ভুগছে খপ্পরে পরা ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় সচেতন মহল ভন্ডবৈদ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ উপজেলা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ইতিমধ্যে স্থানীয়রা সেনা বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রশাসনের উর্ধতন আরো বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন।
উল্লেখ্যযে, ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ হারবাং, কাকারাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভন্ডবৈদ্যের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের আটক করে সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেছিল।
স্থানীয় ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী বলেন,হাদিসা (খতিজাতুল কোবরা) নামে কোনো বৈদ্যের নাম শুনিনি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বৈদ্য পরিচয়ে প্রতারণা মুলক কেউ কোন কর্মকান্ড চালিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে স্থানীয়ভাবে তাহারা সহযোগিতা করবেন।
চকরিয়া থানার ওসি মঞ্জুরুল কাদের ভুঁইয়া বলেন, প্রতারণা মুলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী অভিযান চালালে পুলিশ তাতে সহযোগিতা করবে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যের প্রতারণার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। এরপরও বিষয়টি তদন্ত করে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। বৈদ্যালীর নামে কেউ প্রতারণা করে থাকলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© 2021 - All Rights Reversed Coxs TV | Web Developed by Hostbuzz Inc