আজ, বুধবার | ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সক্রিয় জাল নোটের প্রতারক চক্র/ টার্গেট রোজা ও ঈদে

 

 

 

 

 

 

 

সক্রিয় জাল নোটের প্রতারক চক্র/ টার্গেট রোজা ও ঈদে

সংবাদ দাতা মিজানুর রহমান।

রোজা ও ঈদকে টার্গেট করে সিলেটে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল নোটের কারবারিরা। জাল নোট ছাপানো ও নিজেদের চক্রের মাধ্যমে তা সিলেট বিভাগে ছড়িয়ে দিতে নানা তৎপরতা শুরু করেছে তারা। আগে এই চক্রের সদস্যরা শহরে সক্রিয় থাকলেও এবার ছড়িয়ে পড়েছে বিভাগের উপজেলা পর্যায়ে। গত কয়েকদিনে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে জাল নোট প্রতারক চক্রের কয়েকজন সদস্যকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও ভারতীয় রুপিও উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, রমজান শুরুর আগে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মানুষ প্রচুর পরিমাণ কেনাকাটা করেন। বিশেষ করে শবেবরাতের পরই লোকজন পুরো রমজান মাসের বাজার করে নেন। এ ছাড়া ১৫ রমজানের পর সিলেটে শুরু হয়ে যায় ঈদের কেনাকাটা। এ সময় দোকানগুলোতে থাকে প্রচন্ড ভিড়। এই সুযোগে প্রতারকরা তাদের চক্রের মাধ্যমে বাজারে জাল নোট ছড়িয়ে দেয়। এবারও রোজা ও ঈদ সামনে রেখে ওই চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাল নোটের কারবারিদের ব্যাপারে বিশেষ নজরদারি চলছে। ফলে ধরাও পড়তে শুরু করেছে ওই চক্রের সদস্যরা। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ারও পরার্মশ দিয়েছেন তারা। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থেকে জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম ও জাল নোটসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৮০টি ১ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সিলেটের জালালাবাদ থানার শিবেরবাজার এলাকা থেকে জাল টাকার নোটসহ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বড়কাপন গ্রামের মো. রুজেল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি ১ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রুস্তমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও ভারতীয় রুপিসহ একজনকে গ্রেফতার করে র?্যাব-৯। গ্রেফতার যুগেন্দ্র মল্লিক শ্রীমঙ্গল থানার রুস্তমপুর এলাকার বাসিন্দা। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ভারতীয় ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ রুপি ও বাংলাদেশি ৬৯ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট।

জাল টাকার বিস্তার আগের চেয়ে বেড়েছে মন্তব্য করে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রায় প্রতিদিনই বড় দোকানগুলোতে দু-একটি জাল নোট পাওয়া যায়। দোকানে যখন ভিড় থাকে তখন সব নোট যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। এই সুুযোগে প্রতারকরা জাল নোট দিয়ে প্রতারণা করে থাকে।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, জাল নোটগুলো এত নিখুঁতভাবে ছাপানো থাকে অনেক সময় তা শনাক্ত করা যায় না। ব্যাংকে জমা দিতে গেলেই জাল হিসেবে শনাক্ত হয়।

র?্যাব-৯-এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. মশিহুর রহমান সোহেল গণমাধ্যমকে জানান, সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে অল্প সময়ে অধিক মুনাফার লোভে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি ও প্রতারণামূলকভাবে বাজারজাত করে আসছে। এই চক্রের সদস্যরা আসল নোটের ভিতর জাল নোট ঢুকিয়ে লেনদেন করে মানুষকে প্রতারিত করে। এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে র‌্যাব মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জাল টাকার বিস্তার রোধে পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে। যেহেতু সামনে রোজা ও ঈদ তাই আমাদের বাড়তি নজরদারি রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই এই চক্রের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করেছি। অভিযান অব্যাহত আছে।