আজ, শনিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



পরিবারের দাবি হত্যা- ঈদগাঁওয়ের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার নিয়ে ধূম্রজাল নভেম্বর ২৮, ২০২৩

সংবাদ দাতা মোঃ শাহেদুল ইসলাম

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের কালির ছড়ার পূর্বে গহীন অরণ্যের বাহাতের ঝিরি নামক স্থান থেকে সাহাব উদ্দিন নামের এক সিএনজি চালকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে তার লাশটি উদ্ধার করে ঈদগাঁও থানা। নিহত সাহাব উদ্দিন পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়া খালী ইউনিয়নের ডান হাতির ছড়া গুলিস্তান বাজারের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। একই দিন সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানায় পুলিশ। লাশ উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা ঈদগাঁও থানার এস.আই আরকানুল ইসলাম টিটিএনকে জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে রওনা হয়, গহীন অরণ্যে হওয়ায় ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে একটু বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। পরে সন্ধান চালিয়ে লাশ উদ্ধার পূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে প্রাথমিকভাবে সাহাব উদ্দিনকে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছেন।তার শরীরে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
এদিকে সিএনজি চালক সাহাব উদ্দিনের লাশ উদ্ধার নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছে সে একজন ডাকাত দলের সদস্য, কেউ বলছে সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সাহাব উদ্দিনের পরিবারের দাবি করেন, গত রবিবারে সে নিখোঁজ হয়, নিখোঁজের পর অপরিচিত একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পাওয়ায় হত্যা করতে পারে সন্ত্রাসীরা।

লামা উপজেলার ফাঁসিয়া খালী ইউনিয়নের ডান হাতির ছড়া গুলিস্তান বাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ আক্কাস আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, নিহত সাহাব উদ্দিন পেশায় একজন সিএনজি চালক। ১৫/১৬ বছর আগে রশিদ নগর ইউনিয়ন থেকে এসে বসবাস করে আসছিল। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছিল সাহাব উদ্দিন। ঘটনার তিন দিন আগে থেকে নিখোঁজ হয়েছিল বলে শুনছিল মোঃ আক্কাস আলী।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি ঈদগাঁও ঈদগড় সড়কে ডাকাতি ও অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জনপ্রতিনিধিসহ অপহরণের শিকার হয়েছে ৪ জন। রবিবার রাতে অপহরণের শিকার হন ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রুস্তম আলী। তিন ঘন্টার ব্যবধানে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান রুস্তম আলী মেম্বার।

লোকমুখে চাউর হয়েছে, রুস্তম আলী মেম্বার অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার পর পরই ২/৩ শ জনের সশস্ত্র এলাকাবাসী পাহাড়ে প্রবেশ করে অপহরণকারী দলের আস্তানায় গুলি চালায়। পাল্টাপাল্টি গুলিতে সিএনজি চালক সাহাব উদ্দিনের মৃত্যু হয় হয় বলে জানান ঈদগড়ের কয়েকজন ব্যক্তি। তারা ধারণা করছেন সাহাব উদ্দিনও একজন অপহরণকারী দলের সদস্য। তবে সাহাব উদ্দিনের পরিবারের দাবি সাহাব উদ্দিনকে কৌশলে ডেকে এনে দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণের জন্য অপহরণকারীদের আস্তানায় জিম্মি করে বেধে রেখেছিল। এলাকার লোকজনের উপর্যপুরী গুলিতে সাহাব উদ্দিন মারা যায়। একই দিন আরো তিন ডাকাত গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার পুরোদিন পাহাড়ে ডাকাত দলের দুই গ্রুপের ব্যাপক গোলাগুলির সংবাদ চাউর হলেও নির্ভর যোগ্য এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য সঠিক তথ্য দিতে পারেনি

সাহাব উদ্দিনের মেয়ের জামাই, ডুলহাজারার বাসিন্দা আবদুল করিম জানায়, খবর পেয়ে তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে ময়না তদন্ত শেষে লাশ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।

সচেতন মহলের মতে, নিহত সাহাব উদ্দিন সিএনজি চালক নাকি অপহরণকারী দলের সদস্য? তা পূঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।