আজ, শনিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চিংড়ি জোনের ত্রাস অস্ত্র তৈরীর কারিগর সোহেলের গ্রেফতার ও শাস্তি চায় এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“চায়ের দোকানের কর্মচারী থেকে নামকরা শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অস্ত্র তৈরীর কারিগর সোহেল। তার নাম সোহেল প্রকাশ সোহেল ডাকাত, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের সাওদাগর ঘোনা এলাকার ইদ্রিস আহামদের পুত্র।

এই দুর্ধর্ষ সোহেলের বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা, অস্ত্র ও নারী নির্যাতনসহ প্রায় ১০ থেকে ১৫ টি মামলা চলমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, সোহেল তার জীবনের শুরুতে ছোট্ট বয়সে চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা এলাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিনশত টাকা বেতনে চাকরি করত। সারাদিন চাকরি করার পর সে চায়ের দোকানে রাত যাপন করত। একদিন রাতে সে হোটেল সোনারগাঁও এর ম্যানেজারকে কুপিয়ে সারাদিনের আয়ের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। বছর পাঁচেক পালিয়ে থাকার পর সে সুন্দরবনে চিংড়ি প্রজেক্টে চাকরি নিয়ে কয়েক বছর পার করে সেখানে। তারপর তার নেতৃত্বে গঠন করে বিশাল ডাকাত বাহিনী, সে ডাকাত বাহিনী নিয়ে সাধারণ মানুষের চিংড়ি প্রজেক্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ধরে নিয়ে অমানষিক নির্যাতন চালায়। এভাবেই বেপরোয়াভাবে চলে আসছে এই সোহেলের বিশাল আকারের সিন্ডিকেট।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, তার চাঁদা আদায়ে বাঁধা দিলে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে স্হানীয় খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তিকে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। বর্তমানে হত্যা মামলাটি অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত কক্সবাজারে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও মহেশখালীর এক ব্যবসায়ীকে দিনে দুপুরে চোঁখ উপড়ে ফেলা হয় তার নেতৃত্বে। এই ঘটনায় চকরিয়া থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে, যা বর্তমানে কক্সবাজার চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন। এমন অসংখ্য চাঞ্চল্যকর ঘটনা জন্মের নায়ক এই ডাকাত সোহেল। এছাড়াও চরণদ্বীপ এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে তার গুলিতে স্হানীয় জনতা আহত হয়েছিল, সে ঘটনায় চকরিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়। হত্যা, চাঁদাবাজি ও মানসিক নির্যাতনসহ তার বিরুদ্ধে আরো রয়েছে নারী নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী জানান, এই ডাকাত সোহেল বিভিন্ন সময়ে এক ডজনেরও বেশী মেয়েকে বিয়ে করে সর্বনাশ করেছে। নিঃস্ব করেছে অনেক মেয়ের জীবন। বর্তমানে সে একজন প্রবাসীর স্ত্রীকে বন্দুকের মুখে জিম্মি করে তার সাথে জোরপূর্বক সংসার করতে বাধ্য করতেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানা সেন্টারের দুই সন্তানের জননী রুমা নামে একটা মেয়েকে বিয়ে করে, এরপর আবার করাইয়াঘোনা এলাকা থেকে ১ সন্তানের জননী আরো একটা মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে। এভাবেই প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে বিয়ের নামে প্রতারণা।

অভিযোগ উঠেছে, এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড গুলোকে ধামাচাপা দিতে সর্বশেষ সে সওদাগরঘোনা এলাকায় কাঁচা মরিচের ব্যবসা শুরু করে, মরিচ ব্যবসায় সফলতার কথা উল্লেখ করে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে জাহির করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লোভ দেখিয়ে ২০- ৩০ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে নেয়। এভাবেই তার কাছে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই পন্থায় মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাঁতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও, পুরোদমে চলছে অস্ত্রের ব্যবসা এবং সে নিজে অস্ত্র বানানো শুরু করে। সুন্দরবনের জলদস্যুদের কাছ থেকে নিয়েছে অস্ত্র তৈরির বিশেষ প্রশিক্ষণ। সে তার বানানো অস্ত্র দিয়ে প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষকে।

সম্প্রতি, সে এলাকার মানুষ থেকে পুলিশ ও র্যাবের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছে। বিশাল মোটা অংকের টাকা চাঁদা না দিলে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। এভাবেই এলাকায় ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন ঘটনা অহরহ।
প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সে তার বানানো অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এই ডাকাত সোহেলের অনৈতিক পদক্ষেপ ও জোরপূর্বক অমানবিক মানসিক নির্যাতন থেকে এলাকার সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে তদন্ত পূর্বক প্রশাসন তথা আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।