আজ, শনিবার | ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



জীবিত বা মৃত ফেরৎ পেতে পরিবারের আহাজারী,সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ২৩দিনেও খোজ নেই চকরিয়ার জেলে কমল সেনের

কফিল উদ্দিন, চকরিয়া:
সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে গত ২৩দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়ার জেলে কমল সেন। পরিবার জানিয়েছেন, চোরাই পথে মাছ বিক্রির তথ্য ফাস হওয়ায় একই বোটের অন্যান্য মাঝিমাল্লাদের হাতে খুন হয় জেলে কমল সেন। মৃত্যুর খবরে পরিবারে আহজারিতে আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে। কমল সেন সাহারবিল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড জলদাশ পাড়ার মৃত শুক্র মহন জলদাশের পুত্র।

প্রাপ্ত তথ্যে ও অভিযোগে জানাগেছে, বাশখালী উপজেলার বাংলাবাজার ডিয়ারীঘোনা গ্রামের ফিশিং বোট মালিক ছগির বহদ্দারের সাথে বেতন ভিত্তিক চুক্তিতে অন্যান্য জেলেদের সাথে গত ১নভেম্বর সাগরে মাছ ধরতে যায় চকরিয়ার সাহারবিল ৬নং ওয়ার্ড জলদাশ পাড়ার মৃত শুক্র মহন জলদাশের পুত্র কমল সেন। অন্যান্য সময়ে সাগরে গেলে মোবাইলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। কিন্তু গত ১৯দিনেও কোন খবর না পাওয়ায় জেলে কমল সেনের খবরা খবর নিতে গিয়ে ১৯ নভেম্বর খবর পান অন্যান্য জেলেদের সাথে কমল সেন নেই। তারা মাছ ধরতে যান কুতুবদিয়া থেকে আরো ৫ কিলোমিটার দুরে সাগরের “লাশের দ্বার” নামক এলাকায়। প্রচলিত রয়েছে, সেখান মাছ ধরতে গিয়ে অনেককে লাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়। উল্লেখিত কমল সেন সাগরে গিয়েছিল বাশখালী গন্ডাপাড়া ৯নং ওয়ার্ড অজিত মাঝির অধীনে। সাথে ছিল আরো ১০জন মাঝিমাল্লা।

বাশখালী উপজেলার বাংলাবাজার ডিয়ারীঘোনা গ্রামের ছগির বহদ্দারের একই মালিকানাধীন অন্য ফিশিং বোটে মাছ ধরতে যান কমল সেনের আপন ভাই সুখদেব জলদাশ। আপন ভাই হওয়ায় একই বোটে থাকেননি।

খবর নিয়ে সূত্রে জানতে পারেন, চকরিয়ার জেলে কমল সেনের সাথে থাকা অন্যান্য মাঝিমাল্লারা আহরণকৃত কিছু মাছ চোরাই পথে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি বোট মালিককে বলে দেয়ার কথা বলায় অন্যান্য মাঝিমাল্লারা তাকে পরিকল্পিতভাবে বোটের ভেতরে হত্যা করেন। ধারণা করা হচ্ছে মৃতের লাশ এখনো ফিশিং বোটে বস্তাবন্ধি থাকতে পারে। এ বিষয়ে বোট মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে শান্তনা মূলক কোন ব্যাখ্যা তিনি পরিবারকে দেননি।
পরিবারের দাবী; জেলে কমল সেনকে জীবিত অথবা মৃত লাশ ফেরৎ পেতে চান তারা। তার সংসারে এক স্ত্রী ও তিনটি অবুজ সন্তান রয়েছে। ১৯ নভেম্বর খবর শুনার পর থেকে গত ৪দিন ধরে পরিবারের সদস্যারাসহ আত্বীয়স্বজদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে। তারা বাশখালী থানায় গিয়েও কোন আইনী সেবা পাননি বলে জানান। বর্তমানে উল্টো হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে ফিশিং বোট মালিক বাশখালীর ছগির বহদ্দার।
অসহায় পরিবার ২৩নভেম্বর বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের নৌ মন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নৌবাহিনী, র্র্যাব, কোষ্টগার্ড,পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসন ও মানবাধিকার সংস্থার কাছে জরুরী হস্তক্ষেপ পূর্বক কমল সেন জলদাশের জীবিত কিংবা মৃত লাশ উদ্ধারে আইনী সহায়তা কামনা করেছেন।