আজ, শুক্রবার | ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চকরিয়া পৌর মজিদিয়া দাখিল মাদরাসায় চলছে স্বৈরাশাসন, প্রতিষ্ঠাতাকে অস্বীকার ও সাবেক সুপারদের অবমূল্যায়ন

চকরিয়া প্রতিনিধিঃ
চকরিয়া পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদ্রাসার সুপার নুরুল আবসার ছিদ্দিকী কর্তৃক মাদরাসার মুল প্রতিষ্ঠাতাদের ও সাবেক সুপার বৃন্দের নাম বিলুপ্তিকরণের বিরুদ্ধে আপত্তি ও তাঁহাদের নাম স্বসম্মানে পূণঃবহালের দাবীতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদ্রাসার শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রদের পক্ষে এ অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে। এছাড়ার সুপারের বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসধাসরণ, নিজ ইচ্ছেমত স্বৈরাচারি কায়দায় মনগড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, অনিয়ম দূর্নীতি,স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার গুরুত্বর অভিযোগ। যা প্রাক্তন ছাত্রদের হাতে রয়েছে। অচিরেই নিজ উদ্যোগে সংশোধন হয়ে ফিরে না আসলে এবং প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সম্মানী লোকদের যথাযথ মূল্যায়ন না করলে প্রয়োজনে সুপারের পদত্যাগ কিংবা অপসারণের একদফা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এজন্য তাহাকে শ্রদ্ধার সাথে বিনয়ের সহীত আবেদন করেন। প্রাক্তনরা চায় প্রতিষ্ঠানের শান্তি, ত্যাগীদের সম্মান, সুশৃঙ্খল পরিবেশ ও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা। এজন্য প্রাক্তনরা প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষায় সবকিছু বিসর্জন দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্য জানাগেছে, অত্র মজিদিয়া মাদ্রাসাটি বিগত ১৯৮২ সালে প্রধান প্রতিষ্ঠাতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা বদরুদ্দৌজা হেলালী (রহঃ) এর নেতৃত্বে এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, গুণীজন ও সমাজসেবিদের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। হাটি হাটি পা পা করে অনেক ত্যাগ তীতিক্ষা ও পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে সোসাইটি হাসপাতাল সড়কে একটি বহুতল বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন এবং কোচপাড়াস্থ বর্তমান মাদ্রাসার একাডেমিক স্থাপনা তৈরীসহ মাদ্রাসার ভৌত অবকাঠামোগত উন্নতি সাধিত হয়। বর্তমান মাদ্রাসার সুপার নুরুল আবছার ছিদ্দিকী যোগদান করেন ২০০২ সালে। তিনি বিগত স্বৈরচারী আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে আওয়ামী ওলামালীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান প্রতিষ্ঠাতা (বর্তমানে যাহার একমাত্র কবরটি মাদরাসা মাঠে শায়িত) নামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় যাদের অপরিসীম অবদান রয়েছে তাহাদের নাম সম্পুর্ণরূপে বিলুপ্ত করে সুপারের নিকটত্মীয় জনৈক বুলবুল জন্নাত নামে এক অজ্ঞাত মহিলাকে ২০২৩-২৪ সালে এসে একক প্রতিষ্ঠাতা বানিয়ে নামফলক (স্মরণিকা) তৈরী করে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে টাঙিয়ে দিয়েছেন।এছাড়া প্রতিষ্ঠাকালীন হতে অনেক সম্মানিত সুপারবৃন্দ দায়িত্ব পালন করলেও সাবেক সুপারদের তালিকায় সবাইকে বাদ দিয়ে শুধু মাত্র তাহার নিজ নামের ফলক (স্মরণিকা) টাঙ্গিয়েছেন। ফলে ১৯৮২-২০০২ইং পর্যন্ত সময়ে সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সম্মানিত শিক্ষকগণের নাম তালিকা হতে কর্তন করে কেবল নিজের নামটিই লিপিবদ্ধ করেন। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যে কথিত মহিলাকে দেখানো হয়েছে তাহাকে এলাকার কেউ চিনেন না, তার কোন পরিচিতি ও অবদান নেই । তিনি মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট কোন কাজে ইতিপূর্বে কখনো কোনভাবে জড়িত ছিলেন না। তিনি (সুপার) মাদরাসার বিভিন্ন শিক্ষকদের চাকুরী হারানোর ভয় ও ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি প্রদর্শণ করে বলেন, প্রতিষ্ঠান আমি যে রকম চাই সে রকম চলবে। এটি পুরোপুরি স্বৈরাচারি নয় কি? এত কিছুর পরও নিজের ভুল বুঝতে পেরে সম্প্রতি সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলেও, কোন ধরণের সমঝোতা বৈঠকে না বসে একগোয়ামিভাবে ছুটি ও ট্রেনিংয়ের নামে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ২৯সেপ্টেম্বর সকালে দলবল নিয়ে মাদরাসায় আসেন সুপার। এরপরও প্রাক্তন ছাত্ররা মনে করেন উপযুক্ত মধ্যস্থতাকারী ধরে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করুন। কারণঃ আমরা প্রিয় প্রতিষ্ঠানে শান্তি, শৃঙ্খলা ও সহাবস্থান চাই, বিবেধ চাইনা। যেন সরকার পতনের ন্যায় এক দফা আন্দোলন শুরু করতে না হয়।

এ প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, মাদরানাতো প্রতিষ্ঠা হয়েই গেছে বহুবছর পূর্বে।এখানে আবার নতুন করে প্রতিষ্টাতা কেন আসবে। যারা মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছে তারাই এ পদে থাকবে। এটিতো নতুন করে প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই। টাকা দিয়ে দাতা ক্যাটাগরিতে
সদস্য হওয়া যাবে নিয়সানুযায়ী। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।